শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী :
রাজশাহীতে ছাত্রশিবিরের সাথে সম্পৃক্ততা ও ২০ বছর ধরে ছাত্রশিবিরকে ইয়ানত প্রদান করার অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাজশাহী মহানগর যুবলীগের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান খান চৌধুরী ইতু।
গতকাল বুধবার (১১ আগস্ট) রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের হোটেল সিটি প্লাসের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে এমন বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ইতু।
সংবাদ সম্মেলনে নিজের পারিবারিক পরিচয়, রাজনৈতিক কর্মকান্ডের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রশিবিরের কর্মী পরিচয়ে শিবির ফান্ডে ২০ বছর যাবত ইয়ানত বা অর্থ প্রদান করছি বিষয়টি হাস্যকর ও শতভাগ মিথ্যা।’
সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম বিপুল ভাইয়ের হাত ধরে ১০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগে কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করি। সেই সময় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কমিটি না থাকায় বোয়ালিয়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মির্জা জনি ভাইয়ের নেতৃত্বে সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচীতে সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। এমনকি ২০১০-১৪ সাল পর্যন্ত রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শফিকুজ্জামান শফিক ও সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটু ভাইয়ের কমিটিতেও উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেছি।’
তিনি আরও জানান, ‘এমনকি ২০১৫-১৬ সালে সিলেটে চাকুরিরত অবস্থায় সিলেট মহানগর যুবলীগের সাথে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেছি। ২০১৬ মহানগর যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক পদে মৌখিকভাবে দায়িত্ব পালন করি। পরে ২০১৭ সালের ১৫ মে কেন্দ্রিয় কমিটির ঘোষণার পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ অবধি দায়িত্ব পালন করে আসছি। শুধু তাই নয়, আমার পরিবারের অধিকাংশই আওয়ামীলীগের সাথে সম্পৃক্ত ও পদস্থ। আবার আমার নিজের ছোটবোনকেও বিয়ে দিয়েছি আওয়ামী পরিবারে।’
তিনি বলেন, মূলত: আমার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও বর্তমান সংগঠন আওয়ামী যুবলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন মানসিকতা নিয়েই একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল এই জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাসহ কিছু অনলাইন পোর্টালে মিথ্যে নিউজ করেছেন। এমন অমূলক, অসঙ্গতিপূর্ণ ও বানোয়াট মিথ্যে সংবাদের কারণে আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। যে রশিদের উল্লেখ করা হয়েছে তা জাল রশিদ। তাতে কোনো শিবিরের লোগো নেই, এমনকি ১৯৯৯ সালের ও ২০১০ সালের রশিদও ঝকঝকে নতুন যা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি জাল বা বানানো যা আমাকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।’
সম্মেলনে তিনি এও ঘোষণা দেন যে, ‘আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে যে সকল পত্রিকায় এই রিপোর্টগুলো ছাপানো হয়েছে তারা যেনো তাদের পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদন পত্যাহার করেন। অন্যথায় সেসব পত্রিকার বিরুদ্ধে আমি আমার সম্মান রক্ষার্থে আদালতে শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবো।’
ওই সংবাদ সম্মেলনে উপিস্থিত ছিলেন ২০১০ সালের ছাত্রলীগের কমিটির দায়িত্বে থাকা নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. শফিকুজ্জামান শফিক।
এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিটিতে আসার আগে থেকেই ইতুকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিং এ সক্রিয়ভাবে দল করতে দেখেছি। পরবর্তীতে নগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার সময় তার বিষয়ে খোজ নিয়েই তাকে উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। সে আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন ও কষ্টদায়ক।’
এবিষয়ে কথা হয় মহানগর যুবলীগের সভাপতি মো. রমজান আলীর সাথে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় দপ্তর সম্পাদকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ও পদক্ষেপের বিষয়ে। তিনি বলেন, দপ্তর সম্পাদক ইতুর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে বিষয়টি গণমাধ্যমের দ্বারা সকলকে জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুবলীগের কমিটি করার আগে বাছবিচার করেই কমিটি করেছি। ইতুর সন্ত্রান্ত বংশের একটি আওয়ামী পরিবারের ছেলে। ২০০৪ সাল থেকে ছাত্রলীগের সাথে সে জড়িত। তার বিরুদ্ধে এতোদিন পর এমন অভিযোগ মূলত প্রশ্নাতীত। এবিষয়ে তদন্ত করা হবে, তদন্তে যে বা যারাই দোষী হবে- তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ অপপ্রচার বা অমূলকভাবে সংগঠনের মান ক্ষুন্ন করতে চাইলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি মো. রমজান আলী।’